শীতের সবজি মূলা চাষের এখনই সময়

শীত মৌসুমের অন্যতম পুষ্টিকর ফসল মূলা। অনেকের কাছে অপছন্দের হলেও এই সবজিতে প্রচুর পরিমাণে ক্যারোটিন অর্থাৎ ভিটামিন এ, ক্যালসিয়াম ও লৌহ রয়েছে। আশ্বিন-কার্তিক (মধ্য সেপ্টেম্বর – মধ্য নভেম্বর) মূলা চাষের উপযুক্ত সময়। আগাম মূলা চাষে বেশি লাভ হওয়ায় দেশে মূলার আবাদ দিন দিন বাড়ছে। বিশেষ করে অমৌসুমে শীতের সবজি মূলা চাষে ঝুঁকছেন চাষিরা।

মূলা যেমন জমি ও মাটি

উঁচু, মাঝারি উঁচু ও মাঝারি নিচু জমিতে মূলা চাষ করা যায়। সুনিষ্কাশিত বেলে দোয়াশ মাটি মূলা চাষের জন্য ভাল। এটেল মাটিতে মূলার বাড় বাড়তি কম হয়। মূলা চাষের জন্য জমি গভীরভাবে ধুলো ধুলো করে চাষ করতে হয়। ছাই ও জৈব সার বেশী ব্যবহারে মূলার বাড় বাড়তি ভাল হয়।

সার প্রয়োগ পদ্ধতি
জমি তৈরির সময় সবটুকু জৈব সার, টিএসপি ও অর্ধেক এমওপি সার মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। ইউরিয়া ও বাকি অর্ধেক এমওপি সার সমান ২ কিস্তিতে ভাগে ভাগ করে বীজ বপনের পর তৃতীয় ও পঞ্চম সপ্তাহে ছিটিয়ে সেচ দিতে হবে। মূলার বীজ উৎপাদন করতে হলে জমিতে অবশ্যই বোরন সার হিসেবে বোরিক পাউডার/বোরক্স ব্যবহার করতে হবে। প্রতি হেক্টরে ১০-১৫ কেজি বোরিক এসিড/বোরাক্স দিলেই চলে।

পরিচর্যা
বীজ বপনের ৭-১০ দিন পর অতিরিক্ত চারা তুলে পাতলা করে দিতে হবে। ৩০ সেমি. দূরত্বে একটি করে চারা রাখা ভাল। মাটিতে রস কম থাকলে সেচ দিতে হবে। প্রতি কিসি-র সার উপরি প্রয়োগের পর পরই সেচ দিতে হবে। আগাছা পরিষ্কার করে দিতে হবে। মাটি শক্ত হয়ে গেলে নিড়ানী দিয়ে মাটির উপরের চটা ভেঙ্গে দিতে হবে।

পোকামাকড় ব্যবস্থাপনা
অনেক সময় মূলা পাতার বিট্‌ল বা ফ্লি বিট্‌ল পাতা ছোট ছোট ছিদ্র করে খেয়ে ক্ষতি করে। এ ছাড়া করাত মাছি বা মাস্টার্ড স’ ফ্লাই, বিছা পোকা ও ঘোড়া পোকা পাতা খায়। বীজ উৎপাদনের সময় ক্ষতি করে জাব পোকা।

রোগ ব্যবস্থাপনা
মূলা পাতায় অল্টারনারিয়া পাতায় দাগ একটি সাধারণ সমস্যা। এছাড়া হোয়াইট স্পট বা সাদা দাগ রোগও দেখা যায়।

ফসল সংগ্রহ ও ফলন

মূলা শক্ত হয়ে আঁশ হওয়ার আগেই তুলতে হবে। অবশ্য এখন হাইব্রিড জাতসমূহ আসাতে এ সম্ভাবনা অনেক কমে গেছে। তবুও কচি থাকতেই মূলা তুলে ফেলতে হবে। এতে বাজার দাম ভাল পাওয়া যায় এবং স্বাদও ভাল থাকে। জাতভেদে হেক্টও প্রতি ফলন হয় ৪০-৬০ টন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *